বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১
জাকিরুল আহসান।।
বরিশাল নগরীর ৩ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মতাসার এলাকায় পানির জন্য চলছে হাহাকার। গত আড়াই মাস ধরে সিটি কর্পোরেশনের পাম্পের লাইনে পানি পাচ্ছে না শতাধিক পরিবার। তারা বলছেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিয়েও কোন ফল পাননি। বাধ্য হয়ে দূর দূরান্ত থেকে পানি টানতে টানতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বাড়ির নারী ও শিশুরা।
জানা গেছে, পশ্চিম মতাসার এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের পানির শতাধিক গ্রাহক রয়েছেন। তারা নিয়মিত পানির বিল পরিশোধ করেও আসছেন। হঠাৎ করে গত ১৭ মার্চ এই এলাকার লাইনে সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাৎ পানি আসা বন্ধ হয়ে যায়।
পশ্চিম মতাসারের বাসিন্দা কালাম সিকদারের স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, ১৭ মার্চ সমস্যা দেখা দেয়। এর লাইন মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট মিস্ত্রিকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তিনি কোন সমাধান করেননি। উপায় না পেয়ে বাড়ি থেকে আনেক দূর আমতলা মোড় থেকে কামালের বাড়ি থেকে পানি টেনি আনছি। এভাবেই চলছে গত আড়াই মাস ধরে। পুরো রমজান মাস পানি টানতে টানতে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এ বিষয়ে ওয়ার্ড কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, বিষয়টি দেখতেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি।
তাসলিমা বেগম বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে লকডাউল ঘোষণা করা হয়। আর বলা হয় বেশি বেশি হাত ধুতে। কিন্তু পানি নেই হাত ধুইবো কি দিয়ে। আমাদের একটা পুকুরও নেই, সব পানি টেনে আনতে হয়।
আমতলা মোড়ের বাসিন্দা সোলায়মান বলেন, সিটির লাইনে পানি না পাওয়ায় আমরা পাশের বাড়ির পুকুরের পানি ব্যবহার করতাম। কিন্তু সেই পানিও সেচের কারণে শেষ হয়ে গেছে। পরিবারেরে এত পানি টেনে আনা বড় কষ্টের। কি করবো ৩/৪ পরিবারের পক্ষ থেকে চাঁদা দিয়ে ভ্যান ভাড়া করে পানি এনে ব্যবহার করি। আড়াই মাসের বেশি হয়ে গেল কিন্তু কোন সমাধান পেলাম না।
একই কষ্টের কথা বলেন, গ্রাহক নজরুল চৌধুরী, হালিম ভূঁইয়া ও রানা হওলাদার। তরা বলেন, আমরা নিয়মিত পানির বিল পরিশোধ করে আসছি। অথচ আমাদের লাইনে এতদিন পর্যন্ত সমস্যা ঠিক করে দেয়া হচ্ছে না। আমরা যে তিনমাস পানি ব্যবহার করতে পারলাম না আমাদের বিল কি মাফ করবে? আমাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করার কি এই এলাকায় কেউ নেই?
এ বিষয়ে ওয়ার্ড কমিশনার সৈয়দ হাবিবুর রহমান ফারুক মীরের কাছে জানতে চাওয়া হলে রূপালী বার্তাকে তিনি বলেন, তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তখনই আমি পাম্পের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে লাইন ঠিক করে দেয়া হয়। তারা বলেছে, ঈদের আগে মেরামত করা সম্ভব নয়। আমি এ বিষয়ে আবারও যোগাযোগ করবো যাতে এ সমস্যার সমাধান করা হয়।
এ বিষয়ে রূপালী বার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মিনু রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভুক্তোভোগী পরিবারগুলের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম তাদের দুরবস্থার কথা। তারা যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে আমি চেষ্টা করবো যাতে সমস্যার সমাধান করা যায়।